স্কুল শিক্ষা জীবন নষ্ট করার জন্য দায়ী যে ৭ টি কারণ ।

0 Shares
0
0
0

আমরা আমাদের স্কুল জীবনে অনেক ভুল করে থাকি বা করি । স্কুল জীবনে আমরা দৈনন্দিন কিছু ছোট ছট ভুল করি। যা থেকে কেউ শিক্ষার চেষ্টা করে আবার কেউ করে না। কিন্তু, আমরা কি কখনো নিজেকে জিজ্ঞাসা করেছি যে, আমরা আমাদের স্কুল জীবনে কি কি ভুল করেছি? এবং স্কুল জীবনের ভুল গুলো আমাদের জীবনে কি ধরনের প্রভাব ফেলেছে ?

আজ আমরা এই বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করবোঃ

আমরা যদি একটু সময় নিয়ে , আমাদের স্কুল লাইফের বা জীবনের পার করা দিন গুলো নিয়ে চিন্তা করি তাহলে খুব সহজে বের করতে পারবে আমরা আমাদের স্কুল লাইফে বা জীবনে কি কি ভুল করেছি এবং সেই ভুল গুলো আমাদের বর্তমান জীবন যাপনে কি ধরনের প্রভাব ফেলেছে । আমাদের স্কুল লাইফের জীবনের যে কমন ভুল গুলো ছিল। যেমন –

১.বাবা-মার কথার অবাদ্য হওয়া।

২.শ্রেণি কক্ষে শিক্ষকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়ার সময় অমনোযোগী হয়ে থাকা।

৩.গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্লাস ফাঁকি দিয়ে মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করা।

৪.নিজের মতো চলা ও নিজেকে বড় মনে করা।

৫.শিক্ষকের উপদেশ গুলো মেনে না চলা । ইত্যাদি

তাছাড়া, স্কুল জীবনের যে ভুল গুলো করা আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল সেগুলো হচ্ছেঃ

১.জীবনের কোন লক্ষ্য ঠিক না করাঃ স্কুল লাইফের আমাদের সবচেয়ে বড় এবং প্রথম ভুল ছিল জীবনের কোন লক্ষ্য ঠিক না করা।আমরা আমাদের জীবনে কি হতে চাই সেটির লক্ষ্য স্থির না করে এবং লক্ষ্য সম্মুলত কাজ না করে,নিজের ইচ্ছা মতো চলা। আমরা আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনে কি হব বা করবো সেটি নিয়ে না ভাবা এবং সে অনুযায়ী কাজ না করা। এটি মূলত আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনে অনেক খারাপ প্রভাব ফেলে। সেজন্য,আমাদের প্রত্যেকের একটি লক্ষ্য থাকা খুব প্রয়োজন এবং সে অনুযায়ী কাজ করে যাওয়া। আমাদের প্রত্যেকের জীবনে যদি লক্ষ্য বা purpose না থাকে তাহলে জীবনে বেঁচে থাকাটা মূল্যহীন।

২. স্কুল পালানোঃ আমরা আমাদের স্কুল জীবনে অনেকেই স্কুল পালিয়েছি। কিন্তু, আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি ,যে ক্লাস বাদ দিয়ে স্কুল পালানো আমাদের কি কাজে এসেছে এবং আমাদের কি লাভ হয়েছে । কারণ, আমরা তো এই স্কুল পালানো সময়টি অন্য কোন কাজে লাগাইনি। আমরা ভাবি স্কুল লাইফে স্কুল পালানো একটি মজা, আনন্দ, সৃর্তি ধারক কাজ ছিল। হ্যাঁ এটি সত্যি কিন্তু তবে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত স্কুল পালানো এক সময় একটি নেশায় পরিনত হয় এবং প্রতিনিয়ত আমরা নিজেকে ঠকিয়ে যাওয়া।

৩.অতিরিক্ত খেলাধুলাঃ আমরা খেলাধুলা করতে সকলেই পছন্দ করি। শরীরকে সু-সাস্থ্য রাখার জন্য আমাদের সকলেরই খেলাধুলা করা প্রয়োজন। কারণ,খেলাধুলা করলে মন ও শরীর দুটিই ভালো থাকে।কিন্তু , নির্দিষ্ট সময় পড়ালেখা না করে ‍শুধু খেলাধুলা করা এটা ঠিক না। এই জন্য আমাদের একটি লক্ষ্য স্থির করতে হবে আর লক্ষ্য যদি হয় খেলোয়ার হওয়া তাহলে সে অনুযায়ী খেলাধুলা করা এবং তার পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া। তবে কেউ যদি লক্ষ্য স্থির না করে শুধু খেলাধুলা করে যায় এবং সেই খেলাধুলা ভবিষ্যতে কোন কাজেই আসবে না সেটি মূলত নিজেকে ধোকা হবে।

৪. বড়দের কথা না শুনা এবং না বুঝতে চাওয়াঃ বড়রা আমাদেরকে অনেক সময় কিছু শিক্ষনিয় কথা বলে থাকে। এছাড়াও, স্কুল জীবনে আমাদের কি করা উচিত এবং কি করা উচিত না এবং কোন কাজ গুলো করলে আমরা আমাদের জীবনকে সুন্দর করে গড়ে নিতে পারবো । কিন্তু , আমরা তাদের কথা এবং উপদেশ গুলো অনুযায়ী তো কাজ করি না এবং তাদের কথা গুলো বুঝার চেষ্টাও করি না। অন্যদিকে আমরা আমাদের নিজের মূল্যহীন কাজ নিয়ে পরে থাকি। আর এই ভুলটি আমরা বেশির ভাগ সময় করে থাকি।

৫. নিজের লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ না করাঃ আমরা অনেকেই আছি যে, নিজের লক্ষ্যটি কোন মতে স্থির বা ঠিক করি । কিন্তু , প্রথমে কয়েক দিন সে অনুযায়ী কাজ করে তারপর সেটি ছেরে দেওয়া এবং পরর্বতীতে সেই লক্ষ্য অনুযায়ী আর কাজ না করা।

এতে আমরা আমাদের লক্ষ্য পর্যন্ত যেতে পারি না। যেটি আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনে প্রভাব পরে । সেজন্য আমাদের প্রত্যেকের লক্ষ্য অনুযায়ী কাজ করে যাওয়ার চেষ্টা করা।

৬.নিজেকে বড় মনে করাঃ স্কুল জীবনে আমরা মাঝে মাঝে নিজেকে নিয়ে অহংকার এবং বড় মনে করে থাকি যেমন – জামা -কাপড়, বাড়ি -গাড়ি, টাকা-পয়সা ইত্যাদি দেখিয়ে অন্যকে ছোট করি। আর আমাদের ইসলামে বলা রয়েছে যে – অহংকার পতনের মূল। কেউ যদি নিজেকে নিয়ে অহংকার এক দিন তার পতন হবেই।আমাদেরকে মনে রাখতে হবে আল্লাহ তায়ালা অহংকারীদের পছন্দ করেন না ঘৃণা করেন।আর ,স্কুল জীবনে আমরা যদি নিজকে বড় এবং নিজেকে নিয়ে অহংকার না করে নিজের চিন্তা ভাবনাকে বৃদ্ধি এবং উন্নত করি তাহলে সেটি আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তুলার জন্য সাহায্য করবে। তবে এটি যদি না করি তাহলে প্রতিনিয়ত প্রভাব ফেলে যাবে ।

৭.বন্ধু- বান্ধব নির্বাচনে ভুলঃ লাইফ বা জীবনে বন্ধু- বান্ধব থাকা খুব প্রয়োজন। স্কুল লাইফে বন্ধু- বান্ধব মানে হলো- এই সেই ব্যক্তি যাকে আমি বিপদে, সুখে, দুখে এবং জীবনের যেকোনো পরিস্থিতে আমরা পাশে দাঁড়িয়ে থাকবে। এই ব্যক্তি কোনো স্বার্থ ছাড়া আমাকে বুঝবে আমাকে ভালো পথে চলতে সাহায্য করবে এবং পরামর্শ দিবে। এই সকল কিছু দেখে বন্ধু- বান্ধব নির্বাচনের চেষ্টা করা। তবে বন্ধুত্বের সম্পর্ক কাজ করে থাকে- বিশ্বাস, সম্মান, মানসিক সমর্থন এবং প্রশংসার ভারসাম্যের সাথে।

এছাড়াও,আমরা আমাদের জীবনে অনেক ভুল করেছি তার প্রভাব আমরা আমাদের বর্তমান সময়ে বুঝতে পারচ্ছি। তবে আমরা যখন ভুল গুলো করেছি,সে সময় বুঝতে পারিনি যে সেই ভুল গুলো আমাদের বর্তমান জীবনে বাদা হয়ে দাঁড়াবে।আর স্কুল লাইফের বা জীবনের ভুল বা সিদ্বান্ত গুলোই বলে দেয় ভবিষ্যতে আমাদের জীবন কোন দিকে মর নিবে।

লেখকঃ খাদিজা আক্তার লাবনী।SSC পরীক্ষার্থী।বেপজা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা।

0 Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You May Also Like
বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি ই-লার্নিং ওয়েবসাইট

বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি ই-লার্নিং ওয়েবসাইট | অনলাইন শিক্ষামূলক সাইট

প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং মানুষের কাছে এর প্রবেশযোগ্যতার সাথে, অনলাইন শিক্ষা, যা ই-লার্নিং নামেও পরিচিত। এছাড়াও, ই-লার্নিং প্রত্যেকের জন্য…
Read More
discover-oneself-through-various-activities

বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে , নিজেকে আবিষ্কার করতে পারা।

আমরা মানুষ হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারা আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ । যে কাজটি আমাদের অনেকেরই…
Read More

বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মাদ্রাসা।

৯০% জনবহুল মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে অনেক মাদ্রাসা রয়েছে। এই সকল মাদ্রাসা গুলো ধর্ম ও নৈতিকার শিক্ষা দেয়।…
Read More