রাতে এই পৃথিবী প্রায় প্রত্যেকেই মানুষই অজ্ঞান এবং পক্ষাঘাতের অবস্থায় প্রবেশ করে যেটিকে ঘুম বলা হয় – কিন্তু,আমরা যখন ঘুমাই তখন শরীরের ভিতরে আসলে কী ঘটছে এবং আমরা যদি পর্যাপ্ত না ঘুমই তবে এর আমাদের শরীরে কী প্রভাব পরে?ঘুম মানুষের শরীরে সার্কাডিয়ান রিদম (circadian rhythm) বা মস্তিষ্কে অবস্থিত বডি ক্লক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। শরীরের ঘড়ি বা বডি ক্লক রাতের বেলা মেলাটোনিন হরমোনের( melatonin hormone ) উৎপাদন বাড়ায় এবং শরীরে আলো অনুভব করলে সেই মেলাটোনিন হরমোন( melatonin hormone ) উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।সারা রাত ঘুমের সময় আমাদের শরীর চারটি পর্যায় চক্রাকারে কাজ করে থাকে যা শরীর দিরে দিরে অনুভব করে। একটি শুভ রাতে ঘুমানোর সময় আমাদের শরীর চার বা পাঁচবার এই চারটি পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যেয়ে থাকে।
রাতে মানুষ ঘুমালে শরীর যে চারটি পর্যায় কাজ করে তা নিম্নে বর্ণনা করা হলঃ
এক এবং দুই নাম্বার পর্যায়ঃ এই দুইটি পর্যায় এর কাজটি শুরু হয় হালকা ঘুম দিয়ে। এই দুেইটি পর্যায় আমাদের জেগে থাকা থেকে শুরু করে ঘুমিয়ে পড়া পযর্ন্ত সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও এই দুইটি পর্যায় এর জন্য আমাদের হৃদস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস ধীর হতে শুরু করে, শরীরের তাপমাত্রা কমে যায় এবং শরীরের পেশীগুলি নরতে সাহায্য করে ।
তিন নাম্বার পর্যায়ঃ তিন নাম্বার পর্যায়টি কখনও কখনও ডেল্টা(Delta) ঘুম হিসাবে উল্লেখ করা হয় – কারণ এই পর্যায়ে ডেল্টা(Delta) ধীর গতিতে আমাদের মস্তিষ্কের তরঙ্গ মুক্তি পেতে সাহায্য করে এবং এটি গভীর ঘুমের প্রথম পর্যায়। এই তিন নাম্বার পর্যায় আমাদের কোষগুলির হাড় এবং পেশীগুলিকে সেবা করার জন্য সর্বাধিক হরমোন বৃদ্ধির কাজ চালু থাকে। এতে করে আমাদের শরীর এই সময় নিজেই নিজেকে মেরামত করে নেয়।
চার নাম্বার পর্যায়ঃ এই শেষ পর্যায় আমরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। কিন্তু অনেক সময় আমাদের শরীর এমন এক রাসায়নিক তৈরি করে যা আমাদের শরীরকে সাময়িক সময়ের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে দেয় এর জন্য আমরা আমাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি না। এই শেষ পর্যায়ে,আমাদের মস্তিষ্ক অত্যন্ত সক্রিয় থাকে।সেজন্য আমাদের চোখ যদিও বন্ধ থাকে এবং পিছনে অন্ধকার হয় কিন্তু তারপরও আমাদের মনে হবে আমরা যেন জেগে আছি।
সকল মানুষই মোটামুটিভাবে তাদের জীবনের এক তৃতীয়াংশ ঘুমিয়ে কাটায়। আধুনিক লাইফস্টাইল, স্ট্রেস এবং প্রযুক্তির প্রসারের জন্য মানুষ এক শতাব্দী আগের তুলনায় আজ অনেক কম ঘুমায়।আমাদের দীর্ঘস্থায়ী জীবন বিকাশের জন্য আমাদের প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন এতে করে আমাদের শরীরের ঝুঁকি কমবে এবং আয়ু দীর্ঘস্থায়ী হবে।
তাই স্বাস্থ্যকর দীর্ঘ জীবনের জন্য আসুন আমরা আমাদের চোখ দুটি একটু বন্ধ করি ।