পানি বলতে আমরা সাধারণত বুঝি যা আমরা পান করে থাকি এবং যা আমাদের তৃষ্ণা নিবারন করে থাকে। তবে, এছাড়াও পানি আমাদের নিত্য জীবনের প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। এই জন্য কিভাবে পানি চক্র হয়ে থাকে? সেটি আমাদের জানা প্রয়োজন। পানি ছাড়া এই পৃথিবীর কোন মানুষই তার জীবন চলা-চলার কথা ভাবতে পারে না। কারণ,পানি পান করা ছাড়াও মানুষের অন্যান্য কাজে প্রয়োজন ।যেমনঃ- খাবার তৈরি করা , গোসল করা , বিভিন্ন জিনিস পরিষ্কার করা ইত্যাদি। এখানে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে যে পৃথিবীর মাত্র ২.৫% হল বিশুদ্ধ ও ব্যবহার যোগ্য পানি এবং বাকি ৯৭.৫% হল লবনাক্ত পানি । আর, পৃথিবীর সকল মানুষ তো এই ২.৫% বিশুদ্ধ ও ব্যবহার যোগ্য পানির উপর নির্ভরশীল । তাহলে এখন পযর্ন্ত মানুষ কিভাবে বিশুদ্ধ ও ব্যবহার যোগ্য পানি পাচ্ছে ?
কারণ হচ্ছে, পানি চক্র এবং এই পানি চক্র প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে । তাহলে চলনু জেনে নেই , পানি সর্ম্পকিয় কিছু তথ্য এবং কিভাবে পানি চক্র হয়ে থাকে?
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০টি সফটওয়্যার কোম্পানি।
- ১০ টি খাবার যা বিড়ালকে জন্য হতে পারে ক্ষতিকর ?
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি অনলাইন খাদ্য বিতরণ পরিষেবা ।
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি ই-লার্নিং ওয়েবসাইট এবং শিক্ষামূলক অ্যাপ
- সেরা ১০টি বাংলাদেশী খাবার
পানি হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত। দুই পরমাণু হাইড্রোজেন ও এক পরমাণু অক্সিজেন মিলে এক অণু পানি গঠন করে।পানির রাসায়নিক সংকেত H2O। পানি (অন্যান্য নাম: বারি, সলিল, নীর, অম্বু) হলো একটি অজৈব, স্বচ্ছ, স্বাদহীন, গন্ধহীন এবং প্রায় বর্ণহীন এক রাসায়নিক পদার্থ। বিভিন্ন ধরনের পদার্থ পানিতে দ্রবীভূত হয়ে তাতে বিভিন্ন স্বাদ ও গন্ধের সৃষ্টি করতে পারে। খনিজ মিশ্রিত পানিতে যে স্বাদ পাওয়া যায় তা সেই পানিতে মিশ্রিত খনিজ পদার্থ থেকে উদ্ভূত। কিন্তু বিশুদ্ধ পানি (H2O) সম্পূর্ণ স্বাদহীন ও গন্ধহীন।
পানি চক্র, যা হাইড্রোলজিক চক্র বা হাইড্রোলজিক্যাল চক্র বা পানিচক্র নামেও পরিচিত।পনিচক্রটি মূলত চারটি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে । তা হচ্ছে-
পানিচক্রের প্রথম ধাপ হচ্ছেঃ- পানি একটি জৈব ভূ-রাসায়নিক চক্র যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের উপরে এবং নীচে জলের ক্রমাগত গতিবিধি বর্ণনা করে থাকে।পানিচক্র সংঘটিত করে সৌরশক্তি। সূর্যের তাপে পুকুর, খাল-বিল, নদী ও সমুদ্রের পানি গরম হয়ে জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়।
পানিচক্রের দ্বিতীয় ধাপ হচ্ছেঃ- এটি জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলের ওপরের দিকে উঠে ঠাণ্ডা হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানিকণায় পরিণত হয়। এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানিকণা যখন নানা রকম গ্যাস আর ধুলাবালির সংমিশ্রণে আসে, তখন মেঘের সৃষ্টি হয়। আকাশে মেঘ সৃষ্টির এই প্রক্রিয়াকে বলে ঘনীভবন।
পানিচক্রের তৃতীয় ধাপ হচ্ছেঃ- এই মেঘ যখন পরিমাণে অনেক ভারী হয়ে যায়, তখন মেঘে মেঘে ঘর্ষণে বজ্রপাতের সৃষ্টি হয়। মেঘের পানিকণাগুলো একত্র হয়ে আকারে বড় হয়ে বৃষ্টিরূপে মাটিতে পড়ে। এই কণাগুলো খুব বেশি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে তা বরফে পরিণত হয় এবং শিলাবৃষ্টি হিসেবে পৃথিবীতে নেমে আসে। মেঘ থেকে এভাবে পানি আবার বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি, তুষার বৃষ্টি এরূপ বিভিন্নভাবে পৃথিবীতে ফিরে আসার প্রক্রিয়াকে বলে অধঃক্ষেপণ।
পানিচক্রের সর্বশেষ ধাপ হচ্ছেঃ- বৃষ্টির পানি গড়িয়ে গড়িয়ে নদীর পানির সঙ্গে মেশে। নদীর পানি প্রবাহিত হয়ে সাগরের পানির সঙ্গে মেশে। আর মাটিতে যে পানিকণাগুলো পড়ে, সেগুলো মাটি চুয়ে চুয়ে একেবারে মাটির অনেক গভীরে যেখানে পানি থাকে, সেখানে গিয়ে জমা হয়। পৃথিবীতে পানি তার এক উৎস থেকে অন্য উৎসে এভাবে চক্রাকারে ঘোরে।
পানিচক্রের জন্যই পৃথিবীতে পানির সামঞ্জস্য ঠিক থাকে।পানিচক্রের সঙ্গে শক্তি বিনিময় জড়িত, যা তাপমাত্রা পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। পানি তার চারপাশের পরিবেশকে শীতল করে নিজে বাষ্পীভূত হয়ে আকাশে ওড়ে যায়। একইভাবে জলীয় বাষ্পের ঘনত্ব বাড়লে পরিবেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। পৃথিবীতে বাষ্পীভূত হওয়া পানির ৮৬ শতাংশই সমুদ্রের, যা পৃথিবীর তাপমাত্রা শীতল রাখতে অবদান রাখে।
লেখক : খাদিজা আক্তার লাবনী। S.S.C পরীক্ষার্থী।
বেপজা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ সাভার , ঢাকা।