“Coffee – the favorite drink of the civilized world.” – Thomas Jefferson
সকালে ঘুম থেকে উঠার পর পরই চাঙ্গা হওয়ার জন্য কারো চাই কফি, কারো আবার নাস্তার সাথে, কারো আবার কাজের ফাঁকে, কারো বিকালের ক্লান্তি দূর করতে। কারণ যাই হোক না কেনো, পুরো পৃথিবী জুড়ে প্রতিদিন প্রায় ২ বিলিয়ন কাপ কফি পান হয়। বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় এই পানীয় সম্পর্কে আজকে জানাবো মজার কিছু তথ্য।
কফি আবিষ্কার
কখন এবং কিভাবে কফি আবিষ্কার হয়েছে সে সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য কারো জানা নেই। তবে ধারণা করা হয় যে, কাল্ডি নামের এক পশুপালকের ছাগল একবার এক গাছের ফল (কফি বিন) খেয়ে ফেলে এবং সারা রাত ঘুমায় না। ব্যাপারটি স্থানীয় এক মঠাধ্যক্ষকে (abbot) অবগত করলে তিনি সেই গাছের ফল দিয়ে এক ধরণের পানীয় তৈরি করেন যা তাকে অনেকক্ষন জাগিয়ে রাখে। আর এভাবেই কফি পান শুরু হয়। এই ধারণাটি Ethiopian Legend নামে পরিচিত।
অধিক উৎপাদনের দেশ
২৭,০০০ স্কয়ার কিলোমিটার জমি ব্যবহার করে প্রায় ১৫০ বছর ধরে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ কফি উৎপাদন করে আসছে লাতিন আমেরিকার অন্যতম বড় দেশ ব্রাজিল। ধারণা করা হয় যে, ২০১৬ সালে ব্রাজিল একাই ২,৫৯৫,০০০ মেট্রিক টন কফি উৎপাদন করেছিলো।
কফি পানে শীর্ষ দেশ
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি যে দেশ কফি পান করে তার শীর্ষস্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড। ৫.৫ মিলিয়নের এই দেশটিতে প্রতি বছর মাথাপিছু ১২ কেজি কফি খরচ হয়। নন-ইউরোপীয়ান দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র কানাডা শীর্ষ দশে স্থান করে আছে।
কফি কি শুধু মানুষই পান করে?
মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রানী কি কফি পান করে? ২০১০ সালের গিনেস রেকর্ডে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক বিড়াল স্থানকারী Creme Puff (১৯৬৭-২০০৫)। ৩৮ বছর বয়সী এই বিড়ালটি তার পুরো জীবনে প্রতিদিন সকালে এক কাপ কফি পান করেছে।
অ্যান্টি- ওবিসিটি এজেন্ট
ওবিসিটি (Obesity) বা স্থূলকায় ইদানীং খুব বড় স্বাস্থ্যগত সমস্যা। শরীরের মেদ বা চর্বির পরিমাণ বেড়ে এই সমস্যা হয়। এই চর্বি বা ফ্যাট কমাতে ব্ল্যাক কফির জুড়ি নেই। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইদুরের কোষে কফি ইঞ্জেক্ট করার ফলে এর লিপিডের (চর্বি) পরিমাণ প্রায় ২০%-৪১% কমে গিয়েছে। তাই ক্যাফেইনকে অ্যান্টি- ওবিসিটি এজেন্ট হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন গবেষকদল।
কফির ঘ্রাণ এবং তৃষ্ণা
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিনিয়ত এবং অভ্যাসগত কফি পান করে তার খুব ক্ষুদ্র পরিমাণ কফির ঘ্রাণ চটজলদি অনুভব করতে পারে এবং এই অনুভূতি কফির তৃষ্ণা জাগাতে সক্ষম। বিজ্ঞানীদের ধারণা এই গবেষণা ‘Aversion therapy’ তে ভূমিকা রাখতে পারে।
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০টি সফটওয়্যার কোম্পানি।
- ১০ টি খাবার যা বিড়ালকে জন্য হতে পারে ক্ষতিকর ?
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি অনলাইন খাদ্য বিতরণ পরিষেবা ।
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি ই-লার্নিং ওয়েবসাইট এবং শিক্ষামূলক অ্যাপ
- সেরা ১০টি বাংলাদেশী খাবার
রাতের বিঘ্নিত ঘুম এবং কফি
রাতে বার বার ঘুম ভেঙে যাওয়ার কারণে যাদের পর্যাপ্ত ঘুম হয় না তাদের অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠার পর স্ট্রং ব্ল্যাক কফি পান করেন যা স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পন্ন। বিজ্ঞানীদের মতে এমন ঘুমের পর খালি পেটে কফি পান গ্লুকোজ মেটাবলিজমে বা রক্তে শর্করার পরিমাণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
কফি থেকে জ্বালানি
কিছুক্ষণের জন্য এক কাপ কফি যদি রেখে দেয়া হয় এর উপরিস্তরে তেলের একটি পাতলা আবরণ দেখা যায় যা প্রাকৃতিকভাবে কফি থেকে নিঃসৃত। কফি শপে ব্যবহৃত কফি বীজের গুড়ো যা coffee grounds নামে পরিচিত তা থেকে এই তেল সংগ্রহ করে বায়ো-বিন নামের একটি কোম্পানি বায়োডিজেল তৈরি করেছে। ২০১৭ সালে কোম্পানিটি ৬০০০ লিটার কফি তেল তৈরি করে যা লন্ডনের বাসগুলোতে ব্যবহৃত হয়। এই ডিজেল থেকে নির্গত কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণও কম যা বাতাসের দূষণ কমাতে কার্যকরী ভুমিকা রাখে।
কফি কাপ
কেমন লাগবে যেই কাপ দিয়ে কফিতে চুমুক দিচ্ছেন সেটিও যদি হয় কফির তৈরি? এমনই কফি কাপের উদ্ভাবক জার্মান ডিজাইনার Julian Lechner. ব্যবহৃত কফি বীজের গুড়ো থেকে পরিবেশবান্ধব এই পণ্য ডিজাইনের জন্য Julian Lechner এর Kaffeeform স্টার্ট-আপটি ‘রেড ডট প্রোডাক্ট ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড-২০১৮’ পেয়েছিলো। প্লাস্টিকের এই যুগে এমন পরিবেশবান্ধব উদ্ভাবন সত্যিই প্রশংসনীয়।
শূন্য কফির পাত্র
আপনি যদি একজন কফিখোর হয়ে থাকেন তবে খালি কফি পট দেখে আপনার খারাপ লাগা নিতান্তই স্বাভাবিক। সেই অনুভূতি থেকে University of Cambridge এ তৈরি হয়েছে একটি ওয়েবক্যামেরা যার একমাত্র উদ্দেশ্য হল সেখানের কফি পাত্রের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা।
কফি নিয়ে এমন মজার অজানা তথ্য জানা থাকলে কমেন্টে আমাদের জানাতে ভুলবেন না।
Sources
- https://www.ncausa.org
- https://www.cafedirect.co.uk
- https://www.worldatlas.com
- https://www.boredpanda.com
- https://www.sciencedaily.com
- https://www.sciencedaily.com
- https://www.sciencedaily.com
- https://www.shell.com
- https://www.researchgate.net
- https://www.designboom.com
লেখকঃ উম্মে সুরাইয়া