কোরআন ও হাদিস আলোকে বিপদ।

0 Shares
0
0
0

এই পৃথীবির সকল মানুষ কোনো না কোনো বিপদ বা কঠিন পথ অতিক্রম  করছি। আমাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক , সামাজিক, অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক তথা সামগ্রিক জীবনে আমাদের ও বিপদাপদের কোন সীমা- পরিসীমা নেই।

বিপদ বলতে আমরা সেই সমস্ত অবস্থাকে বুঝায় যা ঝুঁকি সৃষ্টির ব্যাপারে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহায়ক হতে পারে অথবা আমাদের সকলের জীবনে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করতে পারে। আর ধৈর্য হলো সহ্য বা অপেক্ষা করবার ক্ষমতা, সহিষ্ণুতা, ধীরতা।

আমদের জীবনে বিপদ নানা ভাবে আসতে পারে। আমাদের জীবনে বিপদ কিভাবে কোন সময়ে  কোথায়  থেকে আসবে আমরা কিছুই জানি না এবং সেটি বুঝার উপায়ও থাকে না ।  কিন্তু, বিপদ আসলে আমরা  কি করবো  বা কিভাবে বিপদ থেকে বের হতে পারবো  সেটি আমরা খুঁজতে খুঁজতে দিশেহারা হয়ে যাই।আমাদের জীবনে বিপদ আসে কেন , কি জন্য আসে, আসার কারণ  কি। আমাদের জীবনে  বিপদ আসলে আমরা অনেকেই বলি জীবনে কোনো ভুল করে ছিলাম। আমাদের  জীবনে বিপদ সবচেয়ে বড় ভুল হলো নামাজ ছেড়ে দেওয়া, আল্লাহ তায়ালাকে ভুলে যাওয়া। নামাজ ছেড়ে দিয়ে আল্লাহ তায়ালা সব রহমত উঠে যায়। সকল দায়িত্ব উঠে যায়।আমরা যদি নামাজ পড়ি তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সকল বিপদ থেকে রক্ষা করবে।বিপদ আসলে আমরা ভুলে যাই  যে  আল্লাহ বলেছেন যে বিপদ আসলে ধৈর্য ধরতে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কুরআনে বলেছেন- হে ইমানদারগণ, তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন। (সূরা বাকারা – ১৫৩)।

এই একটি বাক্য আমাদের মনোবল বাড়িয়ে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। যত বিপদ আসুক, সর্বশক্তিমান আল্লাহ আমাদের আশ্রয়ে আছেন।কিন্তু  শুধু আল্লাহর উপর ভরসা করে বসে থাকলেই চলবে না। বিপদ থেকে উত্তরণের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। বিপদ থেকে কিভাবে বের হয়ে আসা যাই সেটা বের করতে হবে।

বিপদকে কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

১.রহমত/পরীক্ষা

২.গজব

রহমতের বিপদঃ

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

ولنبلونكم بشي من الخوف والجوع ونقص من الاموال والانفس والثمرات وبشر الصبرين

অর্থাৎ এবং অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরিক্ষা করবো কিছুটা ভয়, কিছুটা ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ফল ফসলের বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও সবরকারীদের।(সুরা বাকারা-১৫৫আয়াত)

গজবঃ

আল্লাহ তায়ালা বান্দার অপকর্ম দেখেই গজব প্রদান করেন। এগুলো আমাদের দুই হাতের কামাই ছাড়া আর কিছুই নয়। বর্তমান সময়ে যে করনার মহামারী এইটাকেও দুই হাতের কামাই বলা যায়। ইবলিশ একটা কথা বা হুকুম না মানার কারণে যদি শয়তানে পরিণত হয় তাহলে আমরা আল্লাহর কত হুকুম অমান্য করছি।

হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত,তিনি  বলেন রসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, যখন সরকারি মালকে নিজের মাল মনে করা হবে,আমানের জিনিসকে নিজের জিনিস হিসেবে ব্যবহার করা হবে, যাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে, ইসলামি আকিদা বর্জিত বিদ্যা শিক্ষা করা হবে, পুরুষ স্ত্রীর অনুগত হবে,মায়ের সাথে দুর্ব্যবহার হবে, বন্ধুদের আপন ভাবা হবে, বাবাকে পর ভাবা হবে, মসজিদে শোরগোল করা হয়, পাপীলোক গোত্রের নেতা হয়, অসৎ ও নিকৃষ্ট লোক জাতির চালক হবে, ক্ষতির ভয়ে কোনো লোককে সম্মান করা হবে, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের প্রচলন অধিক হবে, মদ্যপানের আধিক্য ঘটে, পরবর্তী সময় লোকেরা পূর্ববর্তীলোকদের বদনাম করবে, তখন যেন তারা অপেক্ষা করে লু হাওয়া, ভুমিকম্প, ভুমিধ্বস,মানব আকৃতি বিকৃতি,শিলা বৃষ্টি ইত্যাদি কঠিন আযাবের। যা একটার পর আরেকটা আসতে থাকবে। যেমন হারের সুতা ছিড়ে গেলে মুক্তার দানাগুলো একটার পর একটা পড়তে থাকে।[তিরমিজি]

বিপদ মানুষের আসবেই। কিন্তু, আমাদের ধৈর্য ধরে থাকতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা ধৈর্যশীল মানুষকে খুব পছন্দ করে এবং আমাদের নবী হরযত মোহাম্মদ (সঃ) একজন ধৈর্যশীল ব্যক্তি ছিলেন ।  

লেখকঃ খাদিজা আক্তার লাবনী।SSC পরীক্ষার্থী।বেপজা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা।

0 Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You May Also Like
বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি ই-লার্নিং ওয়েবসাইট

বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ টি ই-লার্নিং ওয়েবসাইট | অনলাইন শিক্ষামূলক সাইট

প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং মানুষের কাছে এর প্রবেশযোগ্যতার সাথে, অনলাইন শিক্ষা, যা ই-লার্নিং নামেও পরিচিত। এছাড়াও, ই-লার্নিং প্রত্যেকের জন্য…
Read More
discover-oneself-through-various-activities

বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে , নিজেকে আবিষ্কার করতে পারা।

আমরা মানুষ হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারা আমাদের জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ । যে কাজটি আমাদের অনেকেরই…
Read More

বাংলাদেশের সেরা ১০ টি মাদ্রাসা।

৯০% জনবহুল মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে অনেক মাদ্রাসা রয়েছে। এই সকল মাদ্রাসা গুলো ধর্ম ও নৈতিকার শিক্ষা দেয়।…
Read More