চা’য়ের ইতিহাস ও চা সর্ম্পকে অজানা কিছু তথ্য।

0 Shares
0
0
0

চা শব্দটির সাথে আমরা অনেকেই বেশ পরিচিত। শুধু যে আজকের দিনেই চা শব্দটির সাথে পরিচিত তা কিন্তুু না অনেক আগে থেকেই গ্রামে, শহরে-বন্দরে চা শব্দটি প্রচলন হয়ে আসছে। চা বলতে আমরা সচারাচর সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট এক ধরনের উষ্ণ পানীয়কে বুঝি। এই চা কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে আমাদের হাতে এসে থাকে- এর সংক্ষিপ্ত উদাহরণ হচ্ছে – প্রথমত চা গাছ থেকে কচি চা পাতা নিয়ে তা শুকিয়ে চা পাতা সংগ্রহ করা হয় এবং পরবর্তীতে তা প্যাকেজিং করে আমাদের হাতে পৌঁছে থাকে। আর সেটি আমরা পানিতে ফুটিয়ে বা গরম পানিতে ভিজিয়ে চা তৈরি করে থাকি।

চা’য়ের ইতিহাস ও প্রকারভেদ

চা’য়ের ইতিহাস

সর্বপ্রথম ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দে চীনে বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু হয়। তারপর ভারতবর্ষে এর চাষ শুরু হয় ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে। ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রিটিশরা বাংলাদেশে সিলেটে সর্বপ্রথম চায়ের গাছ খুঁজে পায়। এরপর ১৮৫৭ সালে সিলেটের মালনীছড়ায় শুরু হয় বাণিজ্যিক চা-চাষ।চা শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ একটি শিল্প। চা নিয়ে চীন, কোরিয়া, জাপানে অসংখ্য কাব্য আছে, সাহিত্য ও রচনা রয়েছে। চা নিয়ে ট্যাঙ ডাইনেস্টির লু হু’র বিখ্যাত একটি বইও আছে যা সপ্তম শতাব্দীতে রচিত হয়।

চায়ের প্রকারভেদ

দুধ চা ও রং বা লাল চা বাদে আরো কিছু সুস্বাদু চা রয়েছে।তুলসী ও মধুর চা, লবঙ্গ চা, কালোজিরা ও গোলমরিচের চা, মশলা চা, তন্দুরী চা, মালাই চা, চকলেট চা, গ্রিন টি বা চা, অপরাজিতা চা, ওলং টি বা চা, হার্বা‌ল চা, বাটার চা, কাশ্মীরি কাহয়া, গোলাপি বা নুন চা, বাদাম চা

বিশ্বের কয়েকটি দামী চা

  • ডা-হোং পাও টি, চীন – প্রতি কেজি ১২ লাখ ডলার। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দামী চা।
  • পাণ্ডা ডাং টি, চীন – প্রতি কেজি প্রায় ৭০ হাজার ডলার।
  • ইয়েলো গোল্ড টি বাডস, সিঙ্গাপুর -প্রতি কেজি প্রায় ৮০০০ ডলার।
  • ভিনটেজ নার্সিসাস, চীন – প্রতি কেজি ৩,২৫০ ডলার।
  • সিলভার টিপস ইমপেরিয়াল টি, দার্জিলিং – প্রতি কেজি ১৮৫০ ডলার।

বাংলাদেশের সবচেয়ে দামি চা

গোল্ডেন বেঙ্গল টি, বাংলাদেশ – (প্রস্তাবিত) – যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ তাদের উৎপাদিত ‘গোল্ডেন বেঙ্গল টি’ নামের বিশেষ চা-য়ের মূল্য নির্ধারণ করেছে প্রতি কেজি ১৪ লাখ পাউন্ড, যা বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় ১৬ কোটি টাকা। ২০২২ সালের মে মাস নাগাদ তারা এই চা বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে। সিলেটে এই চায়ের চা বাগান করা হচ্ছে। এই চা বাজারে আসলে এটি হবে বিশ্বের সবচেয়ে দামী চা।

কেন কফির থেকে চা এর চাহিদা বেশি?

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দু’টি দেশ- ভারত আর চীন- কফির চেয়ে চা’কেই বেশি প্রাধান্য দেয়। অ্যামেরিকা আর ইউরোপের মূল ভূখণ্ডে কফি জনপ্রিয়; তবে এশিয়া মহাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলে আর সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নে চা’ই এখনো বেশি সমাদৃত। ভূগোলবিদ ডেভিড গ্রিগ তাঁর ২০০৬ সালে প্রকাশিত এক প্রকাশনায় উল্লেখ করেন যে চা ও কফির এই দ্বন্দ্ব মেটাতে ওজন দিয়ে নয়, কত কাপ চা বা কফি পান করা হলো সেই বিবেচনায় হিসেব করা প্রয়োজন।তুলনাটা করা উচিত কত লিটার চা বা কফি পান করা হলো সেই হিসেবে।

কারণ ওজনের হিসেবে প্রতিবছর পৃথিবীতে যেই পরিমাণ চা পান করা হয় তার চেয়ে প্রায় ৮০% বেশি কফি পান করা হয়।কিন্তু এক কাপ চা বানাতে ২ গ্রামের মত চা-পাতা প্রয়োজন হলেও, এক কাপ কফি বানাতে প্রায় ১০ গ্রাম কফি বীজ প্রয়োজন হয়।এই হিসেব অনুসারে, “এক কাপ কফির সমানুপাতিক হতে পারে তিন কাপ চা।”

কালো রঙের কাপে চা তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা হয়ে যায় কেন?

কালো রঙের কাপে চা তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা হয়ে যায়। কিন্তু কেন হয়? কেন লাল, নীল, সাদা অর্থাৎ কালো ছাড়া অন্য রং এর কাপে কেন চা তাড়াতাড়ি ঠাণ্ডা হয়ে যায় না? কালো রংয়ের কাপে চা তাড়াতাড়ি ঠান্ডা হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে –কাল রংয়ের তাপ শোষণ ক্ষমতা বেশি। আমরা জানি, তাপ সব সময় উচ্চ তাপয়ে অবস্থা থেকে নিম্ন তাপয়ের অবস্থায় স্থানান্তরিত হয়। এক্ষেত্রে চা এর কালো কাপটি হচ্ছে নিম্ন তাপের অবস্থা থাকে। তাই তা দ্রুত তাপ শোষণ করে নেয় এবং চা তাপ বিকিরণ করে তাই চা ঠান্ডা হয়ে যায়।

লেখক : খাদিজা আক্তার লাবনী। S.S.C পরীক্ষার্থী।বেপজা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ সাভার , ঢাকা।

0 Shares
Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You May Also Like
Top 10 mobile companies in the world

বিশ্বের সেরা ১০ টি মোবাইল কোম্পানি

বর্তমান সময়ে মানুষের চাহিদার সর্বপ্রথমে থাকা প্রোডাক্ট হচ্ছে মোবাইল ফোন বা স্মার্টফোন৷ সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে মোবাইল ফোনের…
Read More

বাংলাদেশের সেরা ১০টি জাদুঘর

বাংলাদেশের জাদুঘরগুলি দেশের ইতিহাস, শিল্প এবং সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে একটি চিত্তাকর্ষক যাত্রা অফার করে। ঢাকার বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর…
Read More

কম্পিউটারের মাধ্যমে ই-মেইল পাঠানোর ১০ টি সহজ ধাপ ।

বর্তমান সময়ে ই-মেইল অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য একটি যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত। ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে অফিসিয়াল কথাবার্তা, সব…
Read More