অনেকেই বাড়িতে বিড়াল পুষতে পছন্দ করেন। পোষা প্রাণীটি ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে ওই পরিবারের সদস্য। যারা বিড়াল পোষেন তাদের চেষ্টা থাকে ভালো খাবারটি পছন্দের প্রাণীটিকে দিতে। কেউ কেউ আবার নিজেরা যা খান তাই বিড়ালকে দেন। কিন্তু এটা ঠিক নয়। কারণ মানুষের জন্য যা উপকারী বিড়ালের জন্য তা নাও হতে পারে।
জেনে নিন এমন ১০ টি খাবারের যা বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর-
১।দুগ্ধজাত
দুধ, পনির এবং দই , নারিকেলের দুধ বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর , কেননা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিড়াল তার মায়ের দুধ ছাড়া অন্য কোনও দুধ খাওয়ার হজমশক্তি হারিয়ে ফেলে। আসল বিষয়টি হলো, মায়ের দুধ ছাড়ার পর বেশির ভাগ বিড়াল ল্যাকটোজ হজম করার ক্ষমতা হারায়। ফলে দুধ বা অন্যান্য দুগ্ধজাতীয় খাবার হজমে সমস্যা তৈরি হয় তাই এটি বিড়াল আর জন্য ক্ষতিকর।
২। চকোলেট , কফি ও চা
চকোলেট, চা ও কফিতে থিওব্রোমিন ও ক্যাফেইন থাকে, যা বিড়ালের জন্য খুবই বিষাক্ত। ডার্ক চকলেট বিশেষ করে বিষাক্ত। অল্প পরিমাণে থিওব্রোমিন ও ক্যাফেইন খাওয়ার ফলে বমি, ডায়রিয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস এবং গুরুতর ক্ষেত্রে খিঁচুনি লক্ষণ এমনকি মৃত্যুর পর্যায়েও যেতে পারে।
৩। বাদাম
মিষ্টি বাদাম বিড়ালদের জন্য অ-বিষাক্ত , তাই আপনার বিড়াল যদি এক বা দুটি খায়, তাহলে তাদের কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যাইহোক, যেহেতু এগুলি আপনার বিড়ালের পাচনতন্ত্র ভেঙে ফেলার জন্য কঠিন, তাই যদি তারা খুব বেশি খায়, তাহলে তাদের পেট খারাপ হতে পারে।বিশেষ করে ম্যাকাডামিয়া বাদাম এবং আখরোট ।সাধারণত মিষ্টি, নির্দিষ্ট চিনাবাদাম ,মাখন এবং আঠা আছে এরকম খাবার বিড়াল আর জন্য ক্ষতিকর
৪। আঙ্গুর এবং কিসমিস
একটুকরো আঙ্গুর বা কিশমিশ বিড়ালের অসুস্থতার কারণ হতে পারে। এগুলি খেলে বিড়ালের কিডনি নষ্টও হয়ে যেতে পারে। এসব খাবার খাওয়ার ১২-২৪ ঘন্টার মধ্যে ইনজেকশন না দিলে বিড়ালের বমি, দুর্বলতা, খাওয়ার প্রতি অনীহা, পাতলা পায়খানা হতে পারে।
৫। অ্যালিয়াম পরিবারের খাবার
রসুন, পেঁয়াজ, চিভস, লিকস, শ্যালটস এবং স্ক্যালিয়ন যা বিড়ালের লোহিত রক্তকণিকার ক্ষতি করে। এর ফলে রক্তশূন্যতা হতে পারে। বেশি পরিমাণে এসব খাবার খাওয়ালে বিড়ালের জন্য তা বিষাক্ত হয়। আবার পেঁয়াজের স্যুপ, রসুনের গুঁড়াও বিড়ালের জন্য বিপজ্জনক।
৬। অ্যালকোহল বা অ্যালকোহলযুক্ত খাবার
বেশিরভাগ অ্যালকোহলে ইথানল এবং শস্য থাকে, যা বিড়ালের জন্য বিষাক্ত । যখন আপনার বিড়াল মাত্র ১ চা চামচ খায় তখন অ্যালকোহল বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। খাওয়ার সময়, আপনার বিড়ালের কিডনি এবং লিভার বিষ পরিত্রাণ পেতে কাজ করবে। কিন্তু যদি তারা খুব বেশি পরিমাণে গ্রহণ করে তবে তাদের কিডনি এবং লিভার অতিরিক্ত কাজ করতে পারে।ফলে বিড়াল আর মৃত্যু হতে পারে ।
৭। বাদাম ও বীজ
ওমেগা 3 ফ্যাট এবং প্রোটিন সহ অনেক ধরণের বাদামের মানুষের জন্য পুষ্টিগত উপকারিতা রয়েছে, বিড়াল এবং কুকুরকে বাদাম দেওয়ার মূল বিষয় হল না বলা । আপনার পোষা প্রাণীর নাগালের বাইরে বাদাম রাখুন এবং একটি অসুস্থ, বা দুর্ঘটনাক্রমে বিষাক্ত, পোষা প্রাণী এড়াতে নিরাপদে সংরক্ষণ করুন।
৮। কাঁচা মাংস এবং মাছ, ডিম
সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি), সেন্টার ফর ভেটেরিনারি মেডিসিন (সিভিএম), এবং ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) তাদের অবস্থানে ঐক্যবদ্ধ (খুব শক্তিশালী তথ্যের ভিত্তিতে) যে বিড়ালদের কাঁচা খাবার খাওয়ানো সম্ভাব্য বিড়াল এবং আপনার উভয়ের জন্যই বিপজ্জনক। কাঁচা বা কাঁচা শস্য জাতীয় খাবার বিড়াল আর জন্য ক্ষতিকর ।
৯। রান্না করা হাড়
হাড়গুলি খাওয়া হলে বিড়ালদের জন্য একাধিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যার মধ্যে দম বন্ধ হওয়া, পরিপাকতন্ত্রে বাধা বা ছিঁড়ে যাওয়া এবং সংক্রমণ সহ। রান্না করা মুরগির হাড়গুলি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কারণ সেগুলি স্প্লিন্টার এবং ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। বলা হচ্ছে, কাঁচা হাড়ও এড়িয়ে চলতে হবে ।
১০। চিনি ও লবন
সোডিয়াম আয়ন বিড়ালের জন্য বিষ। অতিরিক্ত লবন খেলে বমি ও ডায়রিয়া হয়ে মারা যায়। অতিরিক্ত চিনি ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে ও দাঁতের ক্ষতি করে। Xylitol(এক ধরনের মিষ্টি জাতীয় পদার্থ) বিড়ালের জন্য বিষাক্ত।